শাহিন আহমদ,সিলেট জেলা প্রতিনিধি:
ছয়দিন আগে সিলেটের বিশ্বনাথের চৈতননগরে প্রতিপক্ষ যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলমের গুলিতে নিহত হন স্কুলছাত্র সুমেল মিয়া (১৮)। ঘটনার একদিন পর গত সোমবার (৩এপ্রিল) বিকেলে ২৭জনের নাম উল্লেখ করে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের চাচা ইব্রাহীম আলী সিজিল, (মামলা নং ৪)। সাইফুল আলমকে প্রধান আসামি করে দায়ের করা এ মামলায় অজ্ঞাতনামা রাখা হয় আরও ১৬জনকে।
মামলার পর থানা পুলিশ এ পর্যন্ত ৫জনকে আর র্যাব-৯’ এর কর্মকর্তারা সাইফুলের ভাতিজা পারভেজকে গ্রেপ্তার করেছেন। কিন্তু ঘটনার ৬দিন অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামি সাইফুলকে ৬দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আর এতে বিশ্বনাথের জনসাধারণ পুলিশকেই বেশি দায়ী করছেন। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে যেমন ফুঁসে উঠছেন তেমনি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিশ্বনাথের প্রবাসীরা। স্কুলছাত্র হত্যায় অভিযুক্ত প্রবাসী সাইফুলকে ধরিয়ে দিলে ৫লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন হাবিবুর রহমান নামের আরও এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে বসবাসকারী হাবিব বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা। ৭দিনের সময় নির্ধারণ করে দিয়ে তিনি তার ফেসবুক আইডির টাইমলাইনে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার (৪এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে হাবিবুর রহমান তার ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন, ৭দিনের মধ্যে সাইফুলকে পুলিশ, র্যাব কিংবা ডিবি পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিলে তিনি ৫লাখ টাকা পুরস্কার দেবেন।
এর আগে ঘটনার পরদিন রোববার (২ এপ্রিল) ‘৭২ঘন্টার সময় বেধে দিয়ে নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে ৫লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন মোহাম্মদ কবির মিয়া। লন্ডন শহরে বসবসাসকারী কবির পৌর শহরের পূর্ব-চাঁন্দশির কাপন গ্রামের বাসিন্দা।
যদিও সময় পেরিয়ে গেছে কিন্তু তারপরও সন্ধান দাতাকে ৫লাখ টাকা না দিলেও পুরস্কৃত করতে রাজি আছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন মোহাম্মদ কবির মিয়া। তিনি বলেন, বিশ^নাথের অপরাধীকে ধরতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে ‘৭২ঘন্টা’ চলেগেছে। তারপরও সন্ধান দাতাকে অবশ্যই তিনি পরুস্কৃত করবেন।
এ প্রসঙ্গে কথা হলে হাবিবুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, কোন পাবলিক যদি ৭দিনের মধ্যে ধরিয়ে দেন কিংবা সন্ধান দেন তাহলে গোপনীয়তা রক্ষা করে ৫লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
যে কোন সময় সাইফুল গ্রেপ্তার হতে পারে জানিয়ে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা বলেছেন, সাইফুলকে গ্রেপ্তারে সিলেট বিভাগের সর্বত্র পুলিশের পাশাপাশি মাঠে কাজ করছে র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম। তার সে জাতে বিদেশে পালাতে না পারে সেজন্য তার দু’টি পাসপোর্টও জব্দ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১ মে) চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিনের ক্ষেতের জমি থেকে রাস্তায় মাটি তুলতে চাইলে প্রতিপক্ষ প্রবাসী সাইফুল আলমকে বাঁধা দেন নজিরের ভাই মনির মিয়া, চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা স্কুল ছাত্র সুমেল মিয়া। এতে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সাইফুল আলমের বন্ধুকের গুলিতে সুমেল নিহত ও তার বাবা ও চাচা গুলিবিদ্ধ হন।